সংবিধানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণে ১৩৬টি স্থানে ভুল পেয়েছে হাইকোর্টের নির্দেশে গঠিত তদন্ত কমিটি। হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় বৃহস্পতিবার আইন মন্ত্রণালয় থেকে এই প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চে এ বিষয়ে খুব শিঘ্রই শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে বলে জানান রিটকারী আইনজীবী সুবীর নন্দী দাস।

বাংলা একাডিমির সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক শামসুজ্জামান খানকে (মরহুম) প্রধান করে গঠিত তদন্ত কমিটি এই প্রতিবেদন জমা দেন। প্রেস ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ এই কমিটির সদস্য সচিব। কমিটির বাকী সদস্যরা হলেন- বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ ড. মুনতাসীর উদ্দিন খান মামুন, বাংলাদেশ বেতারের সাবেক উপ-মহাপরিচালক আশফাকুর রহমান, বাংলাদেশ বেতারের মহাপরিচালক হোসনে আরা তালুকদার, চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক স. ম গোলাম কিবরিয়া ও বাংলাদেশ টেলিভিশনের মহাপরিচালক এস. এম হারুন-অর-রশীদ।

হাইকোর্টে জমা দেওয়া প্রতিবেদনে বলা হয়, মূল ভাষণের তৃতীয় লাইনে খুলনা অন্তর্ভুক্ত হয়নি। পঞ্চম লাইনে তারা ন্যায্য (অস্পষ্ট) অধিকার চায়। তারা অধিকার চায় অন্তর্ভুক্তি হয়নি। এমনিভাবে ১৩৬টি ভুল ধরে ধরে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। প্রতিবেদনের সর্বশেষ প্যারায় বলা হয়, ভাইয়েরা আমার, যেভাবে আপনাদের, আপনারা ঠাণ্ডা হবেন না, ঠাণ্ডা হয়ে গেলে জালেমরা (ফামলিং) অন্য কোথাও আক্রমণ করবে, আপনারা হুঁশিয়ার থাকবেন এবং প্রস্তুত থাকবেন ইত্যাদি।

২০২০ সালের ১০ মার্চ সংবিধানে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ ভুলভাবে সন্নিবেশিত হয়েছে কি-না তা যাচাই করতে একটি উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। ৭ মার্চের ভাষণের সময় উপস্থিত থাকা ব্যক্তিসহ বিশিষ্টজনদের এ কমিটিতে রাখতে বলা হয়েছিল। এছাড়া সংবিধানের পঞ্চম তফসিলে থাকা ভাষণের সঙ্গে এ সংক্রান্ত সব অডিও-ভিডিও পর্যালোচনা করে একটি প্রতিবেদনও আদালতে দাখিল করতে বলা হয়। একই সঙ্গে সংবিধানে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের সঠিক ভাষণ কেন অন্তর্ভুক্ত করা হবে না তা জানতে চেয়ে ৪ সপ্তাহের রুল জারি করেন হাইকোর্ট। বিচারপতি তারিক উল হাকিম ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের হাইকোর্ট বেঞ্চ ওই আদেশ দেন।